Find the Best bengalistory Shayari, Status, Quotes from top creators only on Gokahani App. Also find trending photos & videos aboutlove shayari in bengali for girlfriend with the word nilanjana, love shayari in bengali for girlfriend, love quotes for him in bengali, bengali sad love quotes that make you cry, bengali sad poem of love,
Ananta Dasgupta
আয়না প্রত্যেক দিনের মত তৈরি হয়েছে অফিসের জন্য কিন্তু তার মন লেগে আছে মোবাইলের দিকে। কারোর অপেক্ষায় বোধহয়। কিন্তু সমস্যা এইটা কি নিজের ব্যাকুলতা কাউকে বলতে পারবে না সে। সমস্যার একটা খুব সুন্দর নাম রেখেছিল হিমানী- "আমার অসহ্য" ছেলেটার সাথে তার পরিচয় হয় কয়েক মাস আগে। হিমানী যে ফ্লোরে কাজ করে তার দুটো ফ্লোর পরেই ছেলেটার অফিস। প্রায় লিফটে দেখা হতো। দেখা পরিনত হয় কথা বার্তায় আর তারপর বন্ধুত্ব। অদ্ভুত এক বন্ধু। আয়নার জীবনে এসে সবকিছু যেন হঠাৎ করে পালটে দিল। আয়না আর ও প্রায় অনেকটা একে অপরের ব্যপারে জেনে গেছিল। ছেলেটা ওকে যত জালাত তত মনে হয় হিমানীর সারা জীবনে কেউ করেনি। কিন্তু ছেলেটার কোনো কথা ফেলত না সে। একদিকে তো দিব্যি সব ভালো চলছে ওর সাথে কিন্তু আরেক দিকে একটা ভয়। যে আয়নার জীবনে আসে সে তাকে ঠিক সেই সময় ছেড়ে চলে যায় যখন আয়নার সেই মানুষটাকে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এই কথাটা ছেলেটি জানত কিন্তু আয়নার মধ্যে থেকে সে এই এত বছরের চাপা ভয় কি ভাবে বের করবে বুঝতে পারত না। এইদিকে আয়না ও হুটহাট করে ছেলেটার ওপরে রেগে গিয়ে অনেক ভুলভাল কথা শুনিয়ে দিত কিন্তু অদ্ভুত ভাবে ছেলেটা অভিমান করলেও আয়নার হাত ছাড়েনি। কিছু মাস পর ছেলেটা বুঝতে পারে সে আয়না কে পছন্দ করে। ঠিক ততটাই যতটা একটা মানুষের মনের মধ্যে জায়গা থাকা দরকার। প্রথমে ছেলেটা মানতে চায়নি কেননা এত কম সময়ের মধ্যে এত একটা গভীর অনুভূতি হওয়া খুব অযুক্তিকর একটা কথা। কিন্তু এই অযুক্তিকর ব্যপারটা ছেলেটার সাথে ঘটে। আয়না এইটা জানত না কিন্তু সে যেই জিনিস গুলি অনুভব করত সেটা কখনও করেনি। আয়না প্রায় ছেলেটার হাত ধরে অফিসের গার্ডেন এরিয়া তে ঘুরত। যেহেতু রাতের সময় সেখানে কেউ যায়না তো ওরা ওখানেই অনেকক্ষণ আড্ডা দিত। ছেলেটার হাত রাখতেই আয়না একটু অন্য রকম অনুভব করত। একদিন কথা বলতে বলতে প্রায় কাঁধে মাথা ঠেকিয়ে দেয়, আলাদা একটা শান্তি। তা ছাড়া ছেলেটার সাথে কথা বলার একটা অভ্যাস তৈরি হয়ে যায়। একদিন ছেলেটা এই কথাটা আয়না কে জানায় তখন আয়না কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর বলে --"বুঝলাম বেদান্ত কিন্তু তুমি সবটাই জানো এইজন্য এই সব ভেব না।" বেদান্ত তারপর আর কখনও কথাটা তোলেনি কিন্তু ওর মনে হতো হয়তো আয়না ইচ্ছা করে কিছু চেপে রেখেছে যেটা বাইরে আসা খুব দরকার না হলে আয়না মধ্যে গুমরে থাকবে। একদিন হঠাৎ আয়না দেখে বেদান্ত তার সামনে থেকে অন্য এক মেয়ের সাথে বেড়িয়ে গেল। জিনিসটা বেদান্ত ইচ্ছাকৃত করেনি কিন্তু আয়নার খারাপ লেগেছে। ©Ananta Dasgupta #bengalistory #FiveMinutes #anantadasgupta
#bengalistory #FiveMinutes #anantadasgupta
read moreAnanta Dasgupta
--"এখানে না। অন্য কোথাও।" হঠাৎ চুম্বন ভেঙে দিয়ে তৃষ্ণা বলল। --"আমার ফ্ল্যাট ফাঁকা আছে, ওখানে?" অমিত নিঃশ্বাস ফেলতে গিয়ে বলল। --"ফ্ল্যাট ইজ় বোরিং। তুমি গাড়ি বের করো আর যেখানে আমি বলব সেখানে দাড়িয়ে যেও। তাহলে তুমি যা বলবে আমি তাই করব।" তৃষ্ণা আস্তে করে অমিতের প্যান্টের উপর তার শিশ্নে হাত বুলিয়ে এগিয়ে গেল। অমিত গাড়ি নিয়ে বেড়াল আর কোনো সময় নষ্ট না করে গাড়ি দৌড় করাল। অনেকটা এগিয়ে এসে তৃষ্ণা একটা ফাঁকা জায়গায় গাড়ি থামাল। জায়গাটা শহর থেকে একটু দুরে। রাতের অন্ধকারে বেশি কিছু বোঝা যাচ্ছে না। শুধু দুরে কিছু জায়গায় আলো দেখা যাচ্ছে। অমিত তৃষ্ণা কে ধরতে যাবে তখনই তৃষ্ণা একটু আটকে বলল। --"খুব তারা তোমার।" একটু শয়তান হাঁসি দিয়ে অমিত তাকাল তৃষ্ণার দিকে। ওই অন্ধকারেও অমিত যেন স্পষ্ট দেখতে পারছে তৃষ্ণা কে। অমিতের বেল্ট বের করে ওর প্যান্ট নামাল তৃষ্ণা আর হাটুর ভরে বসল। অমিত কিছু বুঝতে পারত এর আগেই অমিত তীব্র একটা জ্বালা অনুভব করল। নীচে তাকিয়ে দেখল সেই সুন্দর মুখটার ওপরে অমিতের শরীরের রক্ত। তৃষ্ণা মুখ থেকে ব্লেড টা বের করে দাড়াল অমিতের সরাসরি। অমিতের শিশ্নের ওপর ভাগ থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল। অমিত যতক্ষণে তৃষ্ণার দিকে এগোতো, তৃষ্ণা অমিতের মাথাটা ধরে গাড়ি তে মেরে দিল আর অমিত অচেত হয়ে নিচে পরে গেল। যখন চোখ খুলল তখন দেখল ওর হাত বাঁধা আছে দু দিকে আর গায়ে কাপড়ের একটা টুকরো নেই। সামনে তৃষ্ণা বসে আছে একটা চেয়ারে। --"তুই কে? কি করেছি আমি তোর সাথে?" অমিতের প্রশ্নের কোনো উত্তর দিল না তৃষ্ণা। একটা ছবি দেখাল যেটা দেখে অমিতের সারা গা ঠান্ডা হয়ে গেল। যেই ও তৃষ্ণার দিকে তাকাল, তৃষ্ণা ওর গালের মধ্যে জোরে একটা ঘুষি মারে। তৃষ্ণার হাতে কাঁটা বাঁধা গ্লাভস ছিল। অমিতের গালের চামরা আর মাংস রক্তের সাথে বেড়িয়ে আসে। প্রথমে ডান গাল তার পর বাঁ গালে একেরপর এক ঘুষি চালিয়ে গেল। --"যখন চিনে গেছিস, তখন জায়গাটি দেখ আর মনে কর।" তৃষ্ণা সারা জায়গার লাইট জ্বালিয়ে দিল। জায়গাটা দেখে অমিত ভয় কেঁপে উঠল। --"সাল ২০২৪। এই জায়গায় তুই আর তোর চারটে বন্ধু মিলে আমার বন্ধু কে মেরে ছিলিস। রিপোর্ট অনুযায়ী শী ওয়াস ব্রুটালি রেপ্ড এন্ড মার্ডরড। প্যান্টের নীচে রক্ত খুব বেশি দৌড়ায়, তাই না!" অমিত তৃষ্ণার অন্য রুপ দেখে আরও ভয় পাচ্ছে। এদিকে তৃষ্ণা একটা চাবুক নিয়ে আসে যেটা কাঁটা তারে বাঁধা। অমিতের গায়ে বৃষ্টি পড়ল চাবুকের। অজস্র ঘা অমিতের গায়ে কিন্তু তৃষ্ণার হাত থামেনি। অমিতের চিৎকার ওকে আরও তীব্র আঘাত করার জন্য সাহস দিচ্ছে। পা থেকে মাথা পর্যন্ত অমিত ক্ষত বিক্ষত হয়ে রয়েছে। যখন তৃষ্ণা চাবুক রাখল তখন কোনো ভেজা কাপড়ের মত ওখান থেকে রক্ত পড়ছে টপ টপ করে। অমিত প্রায় অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। ওর গায়ের সমস্ত জায়গা থেকে খুবলে মাংস বেড়িয়ে এসেছে। কান একদিক থেকে কেটে ঝুলছ আর ঝড় ঝড় করে রক্ত বয়ে চলেছে। --"আহারে! খুব ব্যথা করছে?" চুলের মুঠি ধরে চেহারাটা নিজের সামনে নিয়ে আসল আর জলের ঝাপটা দিল। --"যত বার তুই চোখ বন্ধ করবি, তোর মৃত্যু আরও কষ্টকর করব।" ©Ananta Dasgupta #revenge #bengalistory
Ananta Dasgupta
অরিন্দম অফিসে ঢুকতেই ওর মাথার ওপর কাজ চাপিয়ে দেওয়া হল। ক্লাইন্টৈর ডেডলাইনের বাহানা লাগিয়ে মেল করে দিল কি আজকের মধ্যে সমস্ত রিপোর্ট লাগবে। অরিন্দম কাজ করে দেয় কিন্তু অহেতুক কিছু জিনিস ওর সহ্য না। ওর টিমের সমস্ত এল1 দের ডাকল ওদের পুরো সপ্তাহের কাজের জন্য। সবার শেষে ডাক পড়ল প্রিশা। প্রিশা গত সপ্তাহে কোনো কাজ করে উঠতে পারেনি আর অরিন্দম এর জন্য কথা শুনেছে। প্রিশা কে কেবিনে ডেকে অনেকক্ষন বোঝাল কিন্তু একটু কড়া করে। প্রিশা চলে যেতে কাজ নিয়ে বসল অরিন্দম। কাজের মাঝে কখন লাঞ্চ হয়ে গেছে ওর কোনো টের নেই। হঠাৎ ফোন বেজে ওঠে আর দেখে প্রিশা কল করছে। --"বল! কিছু লাগবে তোমার?" --"ঘড়ি তে কটা বাজে দেখেছ?" অরিন্দম দেখল প্রায় খাওয়ার সময় পেড়িয়ে গেছে কিন্তু প্রিশা কে বললে আবার দশটা কথা হবে তো কিছু কথা বাড়াল না। --"আমি খেয়ে নেব। তুমিও খেয়ে নাও।" --"আমার খাওয়া হয়ে গেছে। আমি কল করেছিলাম কেননা আমাদের কে আজকে হাফ ডে দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তুমি সেই যে কেবিনে ঢুকেছ, আর বেড়াওনি। মেসেজ করলাম কিন্তু কোনো কথা নেই।" --"বাহ! বেশ ভালো। যাও বাড়ি গিয়ে রেস্ট নাও।" --"আমি বলেছি তোমাকে আমি বাড়ি যাচ্ছি? আমি আমাদের চায়ের ঠেকে যাব। তোমার ছুটি হলে বল।" অরিন্দম কথা শুনে অবাক হয়ে গেল। অকারণে একটা মেয়ে ৪-৫ ঘন্টা অপেক্ষা করবে এইটা ওর ভালো লাগেনি। --"প্রিশা আমার এক গাদা কাজ পরে আছে। যদি খুব তাড়াতাড়ি করি তবুও এখনও ৪:৩০ ঘন্টা বাকি। তুমি বাড়ি চলে যাও।" --"আমি তোমাকে রিকুয়েস্ট করছি না। জানাচ্ছি। আমি আছি।" প্রিশা বলে ফোন রেখে দিল। --"কি করবে অপেক্ষা করে তুমি এতক্ষণ? তাও আবার এই রোদে সারাদিন ওই টিনের চালের নিচে! তুমি ওরকম থাকলে আমার আরও টেনশন হবে।" অরিন্দম মেসেজ করে বলল। --"আমি অপেক্ষা করব সেটা আমার ব্যপার। তুমি চিন্তা করছ কেন? তুমি কাজ শেষ করে বেড়াও। আর হ্যাঁ, আমি তোমাকে জালাব না আজকে। কিন্তু আমি আছি। এখানেই।" জেদ দেখে অরিন্দম বেশি কিছু বলল না। আবার কাজের ভিতরে ঢুকে পড়ল। কাজের মধ্যে তিন বার নানান কারণে ওকে এদিক ওদিক থেকে লোকেরা ডেকে নয় কথাও নিয়ে যাচ্ছে আর নয় গল্প দিচ্ছে। অরিন্দম সময়ের হিসাব লাগিয়ে যাচ্ছে আর প্রত্যেক বার ওর যাওয়ার মেয়াদ বেড়েই যাচ্ছে। ২ ঘন্টা পেরোতে একবার মেসেজ করল প্রিশা কে --"প্লিজ় প্রিশা। এই ভাবে বসে থেকো না। বাড়ি যাও।" --"আমি আছি। ব্যস!" ©Ananta Dasgupta #anantadasgupta #bengalistory #Firstpart
#anantadasgupta #bengalistory #Firstpart
read moreAnanta Dasgupta
আদেশ ঘরে ঢুকল আর প্রত্যেক দিনের মত ও কোনো সারা শব্দ না করে ব্যাগ রেখে নিজের রুমে চলে আসল। বুক পকেট থেকে রুদ্রাক্ষ বের করে মায়ের কাছে গেল আর বলল। --"মা, এইটা ঠাকুরের সামনে রেখে দাও।" --"কিন্তু তোকে কে দিল রুদ্রাক্ষ?" --"রাস্তায় জল ছিল বলে একটা লোক ছেড়ে দিয়ে গেল। সেই দিয়েছে।" বাকি বৃত্তান্ত আর বলল না। ভিতরে ও যে ভাবে ছটফট করছে সেটা একমাত্র ওই জানত। আদেশ ভয় পাচ্ছে যদি ওর চোখের এক ফোটা জল ওর বাবা মা দেখে তাহলে ওদের মনে কষ্ট হবে। ছেলে হিসাবে আদেশ করতে পারবে না সেটা। মাথা নিচু করে নিজের চোখে জল দিল তখন চোখে লাল দেখে ওর বাবা জিজ্ঞাসা করে। --"হ্যাঁ রে! তোর চোখ এত লাল কেন?" --"বৃষ্টি তে ভিজেছি তাই হয়তো।" একটু ভারিক্কি গলায় বলল আদেশ। আদেশ প্রনাম করতে গিয়ে ঠাকুর স্থানের শিবলিঙ্গ কে ভালো করে দেখল কিন্তু চোখে জল আসতে আবার ঝাপসা হয়ে গেল। আদেশ নিজেকে চাপা রাখতে পারছে না। খুব কষ্ট করে উঠল আর খাওয়ার চেষ্টা করল কিন্তু দু গাল খাওয়ার পড়েই বমি করে ফেলল। --"কি হয়েছে? শরীর খারাপ করছে বাবা?" আদেশের মা থালা রেখে ছুটে আসল। ওর হাত পা কাঁপছে, শরীর দুর্বল আর মনে এক পাহাড় সমান কষ্ট। যেহেতু বলতে পারবে না, তাই আরও ভেঙে পড়ছে। --"তোমরা শুয়ে পড়। আমার কাজ আছে অফিসের।" --"তোর যা করার কালকে করবি। এই ভাবে ভিজে, তার পর রাত জেগে শরীরে আবার অসুখ বাঁধাবে।" আদেশের বাবা কথাটা খুব রুঢ় ভাবে বলতে আদেশ তাকাল কিন্তু কিছু বলল না। ল্যাপটপ খুলে কাজে বসে পড়ল। কিছুক্ষণ পরে সবাই শুয়ে পড়ল। রাত বাড়তে বাড়তে বেড়ে যাচ্ছে আদেশের ঝড়। হঠাৎ করে দিপ্তির একটা ছবি তে ক্লিক হয়ে গেল, দুজনে পাশাপাশি বসে। তারাতারি বন্ধ করে ল্যাপটপ সাইড করে আদেশ লাইট বন্ধ করে দিল। ওর শ্বাস কষ্ট বেড়েই চলেছে। নিজের চারপাশের অন্ধকার কে ভালো করে দেখল। আর যেন ঝড় আটকাতে পারেনি, হাঁটু গেড়ে জড় হয়ে নিজের শরীর ফেলে দিয়ে অন্ধকারে কাঁদছে আদেশ। মনের ভিতরে সমস্ত স্মৃতি উথাল পাথাল খাচ্ছে কিন্তু ওর ব্যথা কমছে না। মাঝখানে একবার কুঁকিয়ে উঠল কিন্তু ভয় মুখে হাত চাপা দিয়ে দিল যাতে কেউ সারা না পায়ে। আদেশের শরীর ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে যাচ্ছিল। নিজের ভার সামলানোর জন্য যখন আদেশ হাত পিছনে রাখে, তখন হাতে কিছু পড়ল। আদেশ ধরে বুঝতে পাড়ল রুদ্রাক্ষ টা ওখানে। ©Ananta Dasgupta #anantadasgupta #shivaay #bengalistory #part2
#anantadasgupta #shivaay #bengalistory #part2
read moreAnanta Dasgupta
কিছু না বলেই দর্শী এগিয়ে গেল তখন অরুণোদয় আবার ডাকল --"দর্শী।" দর্শী পিছনে ঘুরে যখন তাকাল ওর দিকে। --"আবার দেখা হবে।" অরুণোদয়ের কথা তে হালকা ভাবে মাথা নেড়ে এগিয়ে গেল। মনে অনেক কিছু ছিল- "কিছুটা দাড়িয়ে গেলে কি হয়ে যেত। আমাকে ব্যস্ততা দেখাচ্ছে তো, ঠিকাছে। জীবনে আর কোনো কথা বলব না আর না আসব কখনো।" দর্শী ভাবতে ভাবতে রাস্তার ধারে চলে আসল কিন্তু হঠাৎ অরুণোদয়ের জন্য মনে টান দিল। ঘুরে দেখল সে ওখানেই দাড়িয়ে। অরুণোদয়ের ইচ্ছা হতো, একবার যাওয়ার আগে দর্শীর হাঁসি মুখটা দেখতে পাক। আজ সেটা পূর্ণ হল। দুজনের মুখে একটা হাঁসি আর তার পর দর্শী রাস্তা পার করে গেল। একটু পরে ওর মোবাইল বেজে উঠল। স্ক্রিনে অরুণোদয় নাম লেখা। দর্শী কিছু বলতে যাবে তার আগেই.. --"হ্যালো।" কলের ওপার থেকে একটা অজানা গলা। --"কে বলছেন?" দর্শী এক অপরিচিত গলা শুনে আবার মোবাইল দেখল কিন্তু নাম্বার অরুণোদয়ের। --"মিস দর্শী কথা বলছেন?" --"হ্যাঁ বলছি। আপনি কে আর এই ফোন কোথায় পেলেন?" --"আমি ইন্সপেক্টর সৌমেন কথা বলছি। এই মোবাইলটা একটা এক্সিডেন্ট স্পট থেকে পাওয়া গেছে। একটা বাস ভুল রুট থেকে একটা বাইকে ধাক্কা মেরেছে। ছেলেটার মোবাইল ব্যাগে ছিল বলে আপনাকে যোগাযোগ করা যাচ্ছে। কিছু মিস কলস ছিল এই নাম্বারে। আর অফিস আই কার্ডের নাম লেখা- অরুণোদয়।" --"কি উলটো পালটা কথা বলছেন। অরুণোদয় আমার সাথে একটু আগে ছিল আর আপনি এই সব কথা বলছেন?" দর্শীর গলা ভয় আর দুশ্চিন্তায় কেঁপে উঠেছে। --"আমাদের কাছে এত সময় নেই ম্যাডাম কি আপনার সাথে কোনো মজা করব। আমি এই নাম্বারে লোকেশন পাঠাচ্ছি। আপনি আসতে পারেন। আইডেন্টিফাই করে নেবেন।" ফোনটা কেটে গেল। অজস্র ভাবনার মধ্যে দিয়ে দর্শীর মন উথাল পাথাল হচ্ছে। পা জড় হয়ে গেছে মাটিতে, নড়তে পারছে না। চোখের কোনো থেকে জল মুছে সে আবার কাকার দোকানে আসল --"কাকা, ছেলেটা কোন দিকে এগিয়েছে?" --"কোন ছেলে? তুমি তো একাই দাড়িয়ে ছিলে দিদি।" কথা শুনে দর্শীর পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল। --"আপনার সামনে একটা জল জ্যান্ত মানুষের সাথে কথা বলছিলাম। কি বলছেন এই সব?" দর্শী কান্না সামলাতে পারেনি। --"দিদি, আপনি হেডফোনে ছিলেন। আমি কি ভাবে জানব আপনি কার সাথে কথা বলছেন।" --"তাহলে চা কাকে দিয়েছেন যখন দুটো চা চাইলাম।" --"এই দেখুন, একটা চা রাখাই আছে।" দর্শী দেখল ভাঁড়ে চা এখনো রাখা। ছুটল স্পটের জায়গায় গেল যেখানে পুলিশ একটু জিজ্ঞাসাবাদ করে ভিতরে আসতে দেয়। দর্শী দেখল একটা বডি ঢাকা রয়েছে আর পাসে ভাংগা কাঁচের গুড়ো। একটু দূরে ছেড়া অবস্থায় পরে আছে এক ঝাঁক গোলাপ ফুলের পাপড়ি ©Ananta Dasgupta #anantadasgupta #bengalistory
Ananta Dasgupta
--এতক্ষণ ধরে কল করছি। মানুষ একবার দেখে ফোনটা তো তোলে, কি ব্যস্ত আছি, একটু পরে কথা বলছি। কিন্তু বাবু সাহেব ফোন করবেন না। --১৩ খানা মিস কল। তুই সাধারণত এত বার ফোন তো করিস না। কি হয়েছে? --যখন করি না, তখন জানা উচিত কি নিশ্চয়ই কিছু জরুরি কথা আছে, রাইট? দর্শী অরুণোদয় কে মেসেজ ছেড়ে ফোন রেখে দিল। অরুণোদয় রিপ্লাই দিয়েছে কিন্তু দর্শী দেখল না। বুক ভরা অভিমান নিয়ে বসে রইল মাথায় হাত রেখে। কাজ পরে আছে এক গাদা। দর্শী সব ভুলে গিয়ে কাজ শুরু করতে লাগল কিন্তু মাথায় চলছে ২ বছর পুরনো কিছু কথা। অরুণোদয়ের সাথে দর্শীর দেখা হয়েছে একটা অন্য কাজ নিয়ে। প্রথমে সামান্য কাজের কথাই হত কিন্তু দর্শী বুঝতে পেয়েছে অরুণোদয় তাকে পছন্দ করে কিন্তু এটা কখনো দর্শী জিজ্ঞাসা করেনি। ওদের এই বন্ধুত্ব অনেক হাঁসি কান্নার মাঝ দিয়ে গেছে। হয়তো এর জন্যই দুজনের অধিকার টা একে অপরের প্রতি একটু বেশি। সারা কাজ সেরে নিয়ে দর্শী যখন মোবাইল হাতে নিল তখন অরুণোদয়ের অনেক গুলো মেসেজ। --"আমি সত্যিই বুঝতে পারিনি তোর কল কেননা মোবাইল ছিল না।" --"তুই আছিস? কিছু বল।" --"দেখ, তুই এরকম চুপচাপ থাকলে ভালো লাগে না। আর তুই খুব ভালো করে এটা জানিস।" --"ঠিক আছে। বলিস না। আমি আর কি ভাবে বলব তোকে!" এতগুলো মেসেজ পড়ে দর্শী লিখল- "আর ড্রামা করতে হবে না। কাকার চায়ের দোকানে দেখা কর। জরুরি কথা আছে।" মেসেজের দ্রুত গতিতে উত্তর আসল- "সময় হয়েছে উত্তর দেওয়ার। আমি যা বলি তা তোর জন্য ড্রামা। যাই হোক। আমার আসতে একটু দেরি হবে। অনেক ট্র্যাফিক এখানে।" --"সে সব আমি জানি না। আমি তো বলিনি আমি তোমার অপেক্ষা করব না। আর হ্যাঁ! আসার সময় আমার জন্য ভালো গোলাপ দেখে নিয়ে আসবে।" --"নিয়ে আসব। এবার আসলাম।" দর্শী বেড়িয়ে নিজের অফিস ক্যাবে উঠল। গাড়ি নিজের রুট না ধরে অন্য রুট ধরল। দর্শীর জিজ্ঞাসা করতে ড্রাইভার বলল আগে রাস্তা বন্ধ আছে, তাই গাড়ি ঘুড়িয়ে নিয়ে আসছে। প্রত্যেক মিনিটে দর্শী ঘড়ি দেখছে আর ভাবছে যদি অরুণ আসে তাহলে কি ভাবে কথা শুরু করবে, এত দিন পর। ©Ananta Dasgupta #anantadasgupta #bengalistory loves quotes
#anantadasgupta #bengalistory loves quotes
read moreAnanta Dasgupta
আদেশ নিরুদ্দেশের মত রাস্তায় হেঁটে চলেছে বৃষ্টির মাঝে। হঠাৎ আসা এই বৃষ্টির মধ্যে লোকেরা এদিক ওদিক দৌড়চ্ছে। কত বার তো আদেশ কে ঠেলে কত লোক এগিয়ে গেল। কেউ সরি দাদা বলে ক্ষমা চে নিল, কেউ আদেশ কেই দশটা কথা শুনিয়ে দিল। --ও দাদা! কি ভাবে রাস্তায় হাটছেন! আদেশের কানে কি আদৌও কোনো কথা গেছে। সে কিছু বোঝার মত পরিস্থিতি তে নেই। এদিকে মোবাইলের স্ক্রিনটা অন আছে, যেখানে একটা মেসেজ ওকে উদ্দেশ্যে করে লেখা। মেসেজটা এসেছে দিপ্তির তরফ থেকে যেখানে লেখা ছিল- "কিছু জিনিস আমাদের হাতে থাকে না, আদেশ... আমি এখন কিছু পালটাতে পারব না.. এটাই ভাগ্য... তাই তোমার থেকে দূরে সরে যাওয়া ছাড়া আমার কাছে অন্য কোনো উপায় নেই... য়ু ডিসর্ভ বেটার.. ভালো থেকো।" আদেশ একটা সামান্য ঘরের ছেলে। মেধাবী হওয়ার জন্য অনেক জায়গায়, অনেক বিষয় পুরস্কার পেয়েছে। বাবা মায়ের গর্ব কি ছেলে আজ মাথা উঁচু করে চলেছে। নিজে একা হাতে হাঁসি মুখে অল্প বয়সে সংসারের ভার গ্রহণ করেছে। কিন্তু এই ছুটোছুটি তে আদেশ নিজের থেকে, নিজের পরিবার থেকে ইমোশনালি দুরে হয়ে গেছে। বন্ধু বান্ধব ছিল না খুব বেশি। আর যারা ছিল তারাও প্রয়োজন মাত্র। এর মাঝে দিপ্তি হঠাৎই ওর জীবনে আসে। একমাত্র সেই ছিল যার সাথে খুব ইমোশনালি জুরে গেছিল আদেশ। এতটাই, যে দিপ্তি যদি কখনো এড়িয়ে চলে যায়, আদেশ দিশাহারা হয়ে যেত। শিবের খুব বড় ভক্ত ছিল তা নয়, বেশি পুজো করত না, কিন্তু ভালো মন্দ সব বলত এক বন্ধু হিসেবে আর এই বিশ্বাস রেখে, একজন আছে যে সব ঠিক করতে পারে। এই ভেবে নিজের মনের মধ্যে আশার সংসার বানিয়ে সবসময় নিজের পরিবারের খুশি আর ওর সাথে দিপ্তির একটা সংসারের জন্য প্রার্থনা করত। কিন্তু তা হয়নি। দিপ্তি আজ আদেশ থেকে বহু দুরে চলে গেছে। ওর কাছে রয়ে গেছে শুধু এত বছরের জমানো স্মৃতি আর সেই শেষ মেসেজ। আদেশ বুঝতে পারেনি ও কখন লেভেল ক্রসিং পেরিয়ে গেছে। ট্রেনের হর্ন ওর কানে যাচ্ছে না। চোখ ধোঁয়াশা আর মুখে একটা হালকা শব্দ- "শিব সদা সহায়তে।" এই উচ্চারণ ও একমাত্র তখন করত যখন ওর নিজের এই বন্ধুর কথা মনে পরত। ক্রসিং থেকে কিছু লোকের চিৎকারে আদেশ মাথা উঠিয়ে দেখল ট্রেনের আলো ওর চোখের একদম সামনে। ওর পা ওখানেই জমে গেছে। ও সাহস করে এগোতে যাবে তখন লাইনের ওই পারে মুখ থুবড়ে পরে যায় আর ট্রেন নিজের গতি তে পার হয়ে যায়। চলন্ত ট্রেনের পারে আদেশ কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছে। ©Ananta Dasgupta #anantadasgupta #bengalistory #Shiva quotes on life to love quotes life quotes
#anantadasgupta #bengalistory #Shiva quotes on life to love quotes life quotes
read moreAnanta Dasgupta
বসন্ত কে ব্যস্ত হয়ে যেতে বিনোদিনী কাঁধ থেকে মাথাটা সড়িয়ে নেয়। বসন্ত কিছুটা এগিয়ে গিয়ে কথা বলে কিন্তু বিনোদিনী বুঝতে পারে এটা বসন্ত সাধারণ ভাবে কথা বলছে না। ওর মুখে অন্য একটা ভাব। ফোন রেখে দিয়ে বিনোদিনীর পাসে এসে বসল বসন্ত। --"কি হয়েছে?" বিনোদিনী একটু কাছে এগিয়ে জিজ্ঞাসা করল। --"ঐশানি বলে আমার এক কলিগ। পছন্দ করে আমাকে।" কথাটা শুনে আতকে উঠল বিনোদিনী কিন্তু মুখে কিছু নেই। --"আমি স্পষ্ট বলেছি কি আমার সেরকম কোনো ফিলিংস নেই ওর জন্য একটা ভালো বন্ধু ছাড়া। আজ বলেছিল দেখা করতে। আমি কোনো কমিটমেন্ট দেইনি কিন্তু আমার ফেসবুক পোস্ট দেখে আমাকে কল করে দশটা কথা বলছে। ওর এই সন্দেহবাতিক মনোবৃত্তি আমার ভালো লাগে না।" --"তাহলে তোর কি ভালো লাগে?" বিনোদিনীর কথা শেষ হতে শুরু হলো ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। নিজের ঘড়ি আর মোবাইল বিনোদিনী কে দিয়ে বসন্ত চলে গেলে বৃষ্টির মাঝে। বসন্তের আগাগোড়া বৃষ্টি পছন্দ। বিনোদিনীর মানা করাতেও শোনেনি। একটু পরে বিনোদিনী টেনে নিয়ে আসল সিড়ির দিকে। --"কোনো কথা শুনিস না আমার।" বিনোদিনী সাড়ির আঁচল দিয়ে বসন্তের মাথা আর মুখ মুছিয়ে দিল। বসন্ত যখন নিজের চুল ঝাড়ছে তখন বিনোদিনীর চোখ আটকে গেল বসন্তের শরীর থেকে গড়ানো জলের ওপর। প্রত্যেক জলের বিন্দু জায়গা নিচ্ছে ওর ভিজে যাওয়া শার্টের মধ্যে। বিনোদিনী নিজেকে সংযত করে বসন্ত কে ওর মোবাইল আর ঘড়ি দিয়ে দিল। বিনোদিনী নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে বাড়ি যাওয়ার কথা ভেবে বাস স্টপে দাড়ায়। --"চল। আবার দেখা হবে।" বিনোদিনী এইটা বলে বসন্ত কে বিদায় দিল। হঠাৎ বসন্তর চোখ পরে একটা লোকের ওপর যে বিনোদিনীর পিছনে উঠল। বিনোদিনী প্রায় অনেকটা ভিজে গেছে আর লোকটার নজর বার বার বিনোদিনীর দিকেই। বসন্ত চলন্ত বসে উঠে গিয়ে বিনোদিনীর পিছনে দাড়িয়ে গেল। --"তুই উঠলি কেনো?" "তোকে বাড়ি ছেড়ে দিয়ে ফিরে যাব।" বসন্তর কন্ঠস্বর গম্ভীর আর এটার কারণ বিনোদিনী বুঝেছে। লোকটার আরেকবার দেখতে বসন্ত ওর দিকেই তাকাল তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তে। প্রথম বার বসন্ত ঈর্ষা অনুভব করল তবে এটা বন্ধুত্বের নয়। অন্য কিছু। বিনোদিনীর পাশে এসে দাড়াল বসন্ত। বসে যত চোখ বিনোদিনী কে দেখছে, সেই প্রতিটি চোখ আর ওর দিকে তাকায়নি। বিনোদিনী বসন্তের চোখে আজ অন্য এক ছেলে কে দেখছে। বসন্ত বিনোদিনীর পিঠে লাগা জল মুছিয়ে দিয়ে আঁচল টা ওর কোমরে রেখে নিজের দিকে টানল। আচমকা এই টানে বিনোদিনী খুব কাছে এসে গিয়ে দাঁড়ায়। বিনোদিনীর একটা হাতে বসন্তর শার্ট ধরে রেখেছে, সামান্য থেকে একটু বেশি জোরে মুঠো করে। বসন্তর নিঃশ্বাস সামান্য নয়। ও এই উথাল পাথালের মাঝে বয়ে যাচ্ছে আর বিনোদিনীর ঘাড়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে বসন্তর সেই অনিয়ন্ত্রিত নিঃশ্বাস। বসের ঠেলায় বসন্ত আরও জোরে ধরে রেখেছে তাকে, হাত কোমরে ঢাকা। সহসা দুজনের চোখাচোখি হল। ঘাম আর জলে বিনোদিনীর চেহারা মেখে গেছে। বসন্ত আস্তে করে ওর চেহারা মুছে দিল। বিনোদিনী চোখ বন্ধ করে ফেলেছে। বসন্তর হাতের ছোঁয়া ওকে পাগল করে দিচ্ছে। বিনোদিনী আঁকড়ে ধড়ল বসন্ত কে আরও জোরে। ©Ananta Dasgupta #FriendshipDay #anantadasgupta #bengaliwriter #bengalistory
Ananta Dasgupta
--একটা কানের দুল, এক কাপ চা, একটা একটা নুপুর, একটা গল্পের বই আর একটা গোলাপ। --"হ্যাঁ রে! তুই জীবনে আজ ওবধি কখনো গোলাপ নিয়েছিস আমার থেকে!" --"জীবনে আমি ভাবিনি তুই অবুঝ রয়ে যাবি, কিন্তু তুই আছিস তো এখনও।" বিনোদিনীর দিকে একটু কটু ভাবে তাকিয়ে তার পর এগিয়ে পড়ল তারা হাত ধরে কলকাতার ভিজে রাস্তায়। হালকা হাওয়া, চকচকে রোদ আর গরম চা আবার ফিরিয়ে নিয়ে এল দুজনকে পুরোনো গল্পের বাজারে। এখন তাদের কাছে আছে ঝুড়ি ঝুড়ি গল্প। সেই গল্পের মাঝখান দিয়ে কেটে গেল অনেকটা সময়। বিনোদিনী কে নিয়ে গেল একটা মলে যেখানে ওর জন্য একটা সাড়ি কিনল। নীল রং বিনোদিনীর প্রিয়। বসন্তের দিকে তাকিয়ে হাসল আর কিছুক্ষণের পর বেড়িয়ে আসল সাড়ি পরে। বসন্ত ভাবল একটা সিটি মারবে কিন্তু বিনোদিনী চোখ বড় করে আগেই বারণ করে দেয়। --"কি মাল লাগছে তোকে দেখতে!" বসন্তের কথা শুনে মাথায় টোকা মাড়ল বিনোদিনী। --"ইশ! কি ভাষা এইসব, ছোটোলোক।" --"সরি সরি। মানে সুন্দর লাগছে। একটু স্লিপ হয়ে গেছি।" --"সেই! সব জানি তোমার স্লিপ হওয়া।" মুখ ভেংচি কেটে বিনোদিনী বেড়িয়ে গেল। বসন্ত সবকিছু কিনল গোলাপ ছাড়া। বিনোদিনী এটা লক্ষ্য করেছে কিন্তু কিছু বলল না। এত দিন ধরে ও নিজের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু কে দেখা করার জন্য ডাকছিল কিন্তু সেই ছেলেটা এখন প্রিয় বন্ধু থেকে প্রিয় মানুষ হয়ে গেছে আর সমস্যা এটা কি বিনোদিনী এটা জেনেও নিজের বুকে অনেক কিছু চেপে রেখেছে এত বছর ধরে। সমস্ত গল্পের পর দুজনে এসে বসল আহিরীটোলা ঘাটে। ব্যাগ গুলো রেখে বিনোদিনী একবার ঘড়ির দিকে তাকাল। এবার তো ফিরতে হবে। কে জানে পরে কবে দেখা হবে। যদি নাও হয়, কথাও তো সেরকম হবে না। --"ওই! কোন গভীর চিন্তায় চলে গেলি?" মুখের সামনে তুরি মেরে বসন্ত টেনে আনল বিনোদিনী কে বাস্তবতায়। --"না। কিছু না।" --"ও আচ্ছা আচ্ছা! তবে রাস্তা পার হওয়ার সময় চোখের জল মুচ্ছিলিস কেন? সেটাও কি এমনি?" বিনোদিনী অবাক তো হয়েছে কিন্তু প্রকাশ করেনি। নিজেকে চাপা রাখার চেষ্টায় খুব ভালো ভাবে সফল হতে পেরেছে। --"ধুর! ওরকম কিছুই না।" বিনোদিনীর উত্তরে পর বসন্ত আর কিছু বলল না। বিনোদিনীর মনে হল হয়তো একবার বসন্ত কে বলে দিক। অন্তত এই যুদ্ধ বন্ধ হবে ওর মনের মধ্যে। সে বলতে যাবে তখন বসন্তের কাছে একটা কল এল। মোবাইল স্ক্রিনে নাম দেখাচ্ছে "ঐশানি কলিং"। ©Ananta Dasgupta #anantadasgupta #FriendshipDay #bengalistory #bengaliwriter
Ananta Dasgupta
বৃষ্টি হালকা থামল আর বসন্ত এসে দাড়াল বিনোদিনীর সামনে। প্রায় ৫ মাস পর তাদের দেখা। এখন দুজনে তো কলেজে নেই কি দেখা হলেই কাঁধে হাত রেখে ঘুরবে। বিনোদিনী বসন্ত কে দেখে নিজের ভিতরে ওঠা আগ্রহ টা কে চেপে রাখার প্রবল চেষ্টা করছে। অন্তত সফল হতে পেরেছে। "তুই কতক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছিস?" বসন্ত জিজ্ঞাসা করল। "এই ধর, আধা ঘন্টা হয়েছে। কেমন আছিস?" বিনোদিনী হালকা গলায় বলল। "কেমন আর থাকব। অফিস থেকে ঘর, ঘর থেকে অফিস। ব্যস!" বলতে বলতে বসন্তের নজর পড়ল বিনোদিনীর পায়ের দিকে। ওর পা হাঁটুর নিচ থেকে ভিজে গেছে গাড়ির জল লেগে। "এই বোকা! তুই এই ভাবে নিজেকে ভিজিয়েছিস। আর কোনো জায়গা পেলিনা দাড়ানোর জন্য?" বসন্ত চোখ ঘুড়িয়ে দেখল বাজারের মাঝে সব জায়গা তেই জল থই থই করছে। কাচুমাচু মুখ করে আবার তাকাল বিনোদিনীর দিকে। "হয়ে গেছে মুআয়না করা?" বিনোদিনী একটা হালকা হাঁসি দিল। "আসলে এখানে দাড়ানোর বেশি জায়গা ছিল না যখন আমি আসি। আর বন্ধুর জন্য না হয় একটু জলে দাড়ালাম।" "বাবা! মেয়ে বড় হয়ে গেছে।" বলে মুখটা কাছে নিয়ে গেল বিনোদিনীর কাছে। "কি দেখছিস?" বিনোদিনী আশ্চর্য ভাবে তাকিয়ে বলল। "বিনোদ, তুই শেভ করে এসছিস না?" বসন্তের এই কথা বলতেই চুলের মুঠি ধরে ঝাঁকিয়ে দিল বিনোদিনী। "বলবি আর?" "হ্যাঁ! আরও বলব।" বলতেই আবার এক ঘা পিঠের মধ্যে। "উফ। একটা গুন্ডি হয়ে গেছিস। একটাও কিছু কিনে দেব না আজকে।" পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বসন্ত বলল। "তোর ঘাড়ে কটা মাথা আছে দেখি!" ব্যাগটা বসন্তের হাতে ধরিয়ে বলল বিনোদিনী। তাদের ভিতরের জমাট এবার পুরোপুরি কেটে গেছে। "একটাই আছে রে। তোর মত রাবণ নই আমি।" বসন্ত কে জোরে চিমটি কাটল। "ছাড় ছাড়, লাগছে।" প্রায় অনেকটাই মার খাওয়ার পরে বসন্ত বিনোদিনীর হাত ধরে রাস্তা পার করল। বিনোদিনী বন্ধু আর ভালোবাসার ঢেউয়ের মধ্যে দিয়ে ভেসে চলেছে। তার চোখের এক কোনায় জল যেটা বসন্তের তাকানোর আগেই মুছে ফেলে। "মা গো। মেরে ফেলল।" বসন্ত বিড়বিড় করে বলল ওর দিকে তাকিয়ে। "বেশ করেছি। তোকে লিস্ট পাঠিয়েছি আজকের জন্য।" বিনোদিনী এক গাল হাঁসি নিয়ে বলল। বসন্ত আগেই লিস্ট দেখে নিয়েছিল। একটা কানের দুল, এক কাপ চা, একটা একটা নুপুর, একটা গল্পের বই আর একটা গোলাপ। ©Ananta Dasgupta #anantadasgupta #FriendshipDay #bengalistory #bengaliwriter